কিশোরগঞ ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে পাওয়া গিয়েছে ২৯ বস্তা টাকা, চলছে গণণা।
মোঃ আবুল বাসার সাইফুল ক্রাইম রিপোর্টার।
কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদের ১১টি দানবাক্সে এবার পাওয়া গেছে ২৯ বস্তা টাকা। আজ শনিবার সকাল ৭টায় মসজিদ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান, পুলিশ সুপার মো. হাছান চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মিজাবে রহমত ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রুবেল মাহমুদের উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এরপর টাকাগুলো সিনথেটিক বস্তায় ভরে মসজিদের দোতলার মেঝেতে ঢেলে মসজিদ কমিটি ও প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে গণনা শুরু করা হয়।
সর্বশেষ ১৭ আগস্ট দানবাক্সে পাওয়া গিয়েছিল ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা। সঙ্গে বেশ কিছু বিদেশি মুদ্রা ও সোনা-রুপার গহনা। প্রতি তিনমাস পরপর দানবাক্স খোলা হয়। তবে এবার খোলা হয়েছে তিন মাস ১৩ দিন পর।
গণনা চলছে: পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্সের নূরুল কোরআন হাফিজিয়া মাদাসার ১২৮ জন ছাত্র, ৩৫ জন শিক্ষক ও স্টাফ, আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার ১৫০ জন ছাত্র, রূপালি ব্যাংকের ৭৫ জন স্টাফ টাকা গণনার কাজে অংশ নিয়েছেন। দেশি মুদ্রার পাশাপাশি পাওয়া গেছে বেশ কিছু বিদেশি মুদ্রা এবং সোনা-রুপার অলংকারও। কেউ কেউ ৫০০ টাকা নোটের বান্ডেলও (৫০ হাজার টাকা) দান করেছেন।
দানবাক্সের বাইরেও মানতকারীরা বিভিন্ন জাতের গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি, কবুতর, দুধ ও সবজি দান করে থাকেন। এগুলি উন্মুক্ত নিলামে বিক্রি করে ব্যাংক হিসাবে জমা রাখা হয়।
এছাড়া পাওয়া গেছে মনোবাঞ্ছা পূরণের আর্তি প্রকাশ করা বহু চিঠি ও চিরকুট। এসব টাকা মুদ্রামান অনুযায়ী পৃথক করে ব্যাংকের গণনা মেশিনের মাধ্যমে ১০০টি নোটের বান্ডেল বাঁধা হচ্ছে। সব টাকা রূপালী ব্যাংকে মসজিদের হিসাবে জমা হবে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. রফিকুল ইসলাম।
কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে পৌনে দু’ শ বছর আগে গড়ে ওঠা এই মসজিদে দেশ-বিদেশের নানা ধর্মের মানুষ অনুদান পাঠায়। প্রতি জুমার দিন দেশের নানা জেলার প্রচুর মানুষ এখানে নামাজ আদায় করে অনুদান দিয়ে যান। অনেকে মানি অর্ডারের মাধ্যমেও অনুদান পাঠান। এখানে দান করলে মনোবাঞ্ছা পূরণ হয় বলে মানুষের বিশ্বাস। ব্যাংকে জমা রাখা দানের টাকার লভ্যাংশ থেকে মসজিদ কমপ্লেক্সের নানা রকম খরচ মিটিয়ে হতদরিদ্র মানুষদের নানা আপদ-বিপদেও সাহায্য করা হয়ে থাকে।
জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান বলেছেন, দান বাক্সে পাওয়া টাকা থেকে অসহায় জটিল রোগীদের অনুদান দেওয়া হয়। মসজিদ কমপ্লেক্স মাদ্রাসার ১৩০ জন এতিম ছাত্রের খরচসহ মসজিদ পরিচালনার খরচও মেটানো হয়। জমানো টাকা থেকে পুরুষ ও মহিলাদের নামাজের আরও দুটি শেড নির্মাণ করা হবে। এছাড়া মসজিদ কমপ্লেক্সের সম্প্রসারণের কাজও করা হবে।
আরো পড়ুন।
http://খাগড়াছড়ি রামগড়ে বাঁশরী ওয়াদুদ ফুটবল টুর্নামেন্টের শুভ উদ্বোধন।