পঙ্গুত্বের আশঙ্কায় দিন কাটছে ইন্দুরকানী দিনমজুর বেল্লালের

পঙ্গুত্বের আশঙ্কায় দিন কাটছে ইন্দুরকানী দিনমজুর বেল্লালের।

 

পঙ্গুত্বের আশঙ্কায় দিন কাটছে ইন্দুরকানী দিনমজুর বেল্লালের

শিউলি আক্তার ক্রাইম রিপোর্টার

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার কালাইয়া গ্রামের বেল্লাল হোসেনের দিন কাটছে পঙ্গুত্বের আশঙ্কায়। তাঁর সময় কাটে বিছানায় শুয়ে। অভাবের সংসারে ওষুধ কিনতেই হিমশিম অবস্থা। চিকিৎসার অভাবে তাঁর হাতটাই কেটে ফেলতে হতে পারে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন বা কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা এমনকি সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও আর্থিক সহায়তা মেলেনি বেল্লালের ভাগ্যে। নিজের ও পরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি।

বেল্লালের বাবা আব্দুল বারেক হাওলাদার এলাকায় ছোট দোকান নিয়ে চা বিক্রি করেন। দুই ছেলের মধ্যে বেল্লাল ছোট। সংসারের অভাব ঘোচাতে ১২ বছর আগে ঢাকায় যান। যাত্রাবাড়ী এলাকায় দিনমজুরের কাজ করেন। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সেখানেই বসবাস করছেন। যা আয় করেন, তা দিয়ে স্ত্রী-সন্তানের ভরণপোষণের পাশাপাশি বাড়িতে থাকা বাবা-মায়ের জন্যও টাকা পাঠাতেন।

বারেক হাওলাদার বলেন, ‘মোর পোলার কী দোষ ছিল? গুলি কইরা ডান হাতটা শেষ কইরা দিছে। সেদিন সরকারি হাসপাতালেও ভর্তি হতে পারিনি। বেসরকারি হাসপাতালে নিয়া চিকিৎসা করাইতে গিয়ে অনেক টাকা খরচ হইছে। ডাক্তার কইছে আরেকটা অপারেশন লাগব। কিন্তু টাকা নাই। কেমনে চিকিৎসা করামু।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে বেল্লালের মা বলেন, ‘পেটের টানে পোলাডা ঢাকায় কাজ করতে গেছিল। রাজনীতি করত না। তার পরও গুলি খাইল। শুনছি যারা আন্দোলনে আহত হইছে, তাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা করছে ছাত্ররা। কিন্তু আমার পোলার খোঁজ তো কেউ নিল না।’

গত ১৯ জুলাই শুক্রবার সকালে বাজার করে ফেরার পথে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশ ছাত্র-জনতার মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে একটা গুলি এসে বেল্লালের ডান হাতের বাহুতে বিদ্ধ হয়। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে রোগীর চাপ থাকায় ভর্তি করা সম্ভব হয়নি। পরে প্রাইভেট ক্লিনিকে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক জানিয়েছেন বেল্লালের আরও একটি অপারেশন করাতে হবে। টাকা না থাকায় তাঁকে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরিয়ে আনা হয়।

গুলিবিদ্ধ বেল্লাল হোসেন জানান, আন্দোলনের সময় হাসপাতাল থেকেও অনেককে ধরে নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। তাই একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে গোপনে বাসায় আসি। কাজ করতে পারি না। সংসার চলবে কীভাবে। চিকিৎসার জন্যইবা টাকা পাব কোথায়? কেউ সাহায্য করলে অপারেশনটা করতে পারতাম।

সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ করিম তালুকদার ইমন বলেন, কোটা আন্দোলনে আমার ইউনিয়নে দু’জন ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদের একজন বেল্লাল হোসেন। খবর নিয়ে জেনেছি, তাঁর চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা প্রয়োজন। তাঁকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

 

আরো পড়ুন।

http://টেকনাফে শিশু তাহমিনা হত্যার ঘটনায় জড়িত দুই জন কে আটক করেছে পুলিশ

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *