বনবিভাগের কর্মচারীর যোগসাজশে ২৫ লাখ টাকার গাছ সাবাড়।

বনবিভাগের কর্মচারীর যোগসাজশে ২৫ লাখ টাকার গাছ সাবাড়।

বনবিভাগের কর্মচারীর যোগসাজশে ২৫ লাখ টাকার গাছ সাবাড়।

ওসমান গনি,
বিশেষ প্রতিনিধি :

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি সাতগড় বনবিট অফিসের ১৫০ গজের মধ্য থেকেই উজাড় হয়ে গেছে ২৫ লাখ টাকার গাছ। সাতগড় বনবিট কর্মকর্তার যোগসাজশে গাছগুলো কাটা হয়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। আনুমানিক দেড় শতাধিক সেগুন গাছ ও দুই শতাধিক আকাশমণি গাছ কাটা হয়েছে। বন বিভাগরে কর্মীদের যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে গাছ কাটা হচ্ছে বলে অভিযোগ।

জানা গেছে, ওই এলাকায় ১৯৯৭ সালে ২০ একর আয়তনে সেগুন ও আকাশমণি বাগান সৃজিত হয়। ওই বাগান থেকে গাছগুলো কাটা হয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের আওতাধীন চুনতি রেঞ্জের সাতগড় বন বিটের পেরইত্যাঘোনা ও পাশের আলতাফের জুম এলাকায় গাছগুলো কাটা হয়েছে। বিশাল অংশজুড়ে বাগানের বড় আকারের গাছগুলো কাটা হয়। এখনও গাছের মোথা (গুঁড়ি) রয়ে গেছে। আড়াল করতে মোথাগুলোয় গাছের ডালপালা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। গাছের মোথা দেখে স্থানীয়রা ধারণা করছেন, এক সপ্তাহ আগে গাছগুলো কাটা হয়েছে।

স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে একটি চিহ্নিত প্রভাবশালী চক্র গাছ কেটে নিয়ে গেছে। গভীর রাতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক সংলগ্ন সাতগড় বনবিট অফিসের সামনে দিয়ে জিপ গাড়িতে করে গাছগুলো পেকুয়া উপজেলায় নিয়ে যাওয়া হয়। জিপ গাড়িটির মালিক চুনতি রেঞ্জের কর্মচারী ওমর ফারুক। স্থানীয় লোকজন বিট কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে বলার সাহস পান না। কারণ তিনি স্থানীয়দের বন মামলার আসামি করার হুমকি দেন। ইতোমধ্যে যারা বলেছেন, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা হয়েছে বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী।
সাতগড় বন বিট কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম গাছ কাটার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘বন বিভাগের কিছু গাছ কেটেছে দুর্বৃত্তরা। ইতোমধ্যে প্রায় ৫০ ঘনফুট গাছ জব্দ করা হয়েছে। গাছ পাচারে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হবে।’

স্থানীয় বাসিন্দা সাংবাদিক নাজিম উদ্দিন রানা বলেন, ‘৫০ ফুট গাছ জব্দ দেখিয়ে তিনি কোটি টাকার গাছ কাটার ফন্দি করেছেন বিট কর্মকর্তা। তার বিরুদ্ধে বলা লোকদের মামলা দেন তিনি। সেগুন ও আকাশমণি গাছ কাটার বিষয় জানতে চাইলে তিনি আমাকেও মামলার আসামি হুমকি দিয়েছেন।’

স্থানীয় লোকজন জানান, চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের সহকারী বনসংরক্ষক দেলোয়ার হোসেনের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে বনবিট কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বেপরোয়া। তিনি টাকার বিনিময়ে বনের গাছ কেটে জায়গা দখল ও বসতবাড়ি নির্মাণের সুযোগ করে দেন। গাছ চোরাকারবারিদের সঙ্গে তার রয়েছে সখ্য। গভীর রাত পর্যন্ত তার অফিসে গাছ চোরাকারবারিদের আড্ডা দিতে দেখা যায়। এ ছাড়া সুফল বাগানের নার্সারি ও বনায়নের নামে প্রায় ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এ ব্যাপারে সহকারী বনসংরক্ষক দেলোয়ার হোসেনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
চট্টগ্রাম অঞ্চলের বনসংরক্ষক ড. রেজাউল করিম মোল্যা বলেন, ‘চুনতি বন বিটে গাছ কাটার ঘটনার সত্যতা যাচাই করে দেখা হবে। এতে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

 

আরো পড়ুন।

 

http://হ্নীলায় কৃষক দলের সমাবেশে বিএনপি নেতা আব্দুল্লাহ দেশ থেকে সৈরাশাসকের প্রেতাত্মাদের উৎখাত করতে হবে।

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *